ছোটবেলায় বেশির ভাগ মানুষ যখন ব্ল্যাক হোলের নাম শুনে , জানার আগ্রহ থাকে অনেক । সায়েন্স ফিকশন সহ বিভিন্ন জায়গায় এটি আজব ভাবে উপস্থাপণ করা হয় ফলে আগ্রহ থেকেই যায় কিন্তু জানা আর হয় না । আমি চেষ্টা করছি সহজ ভাবের বুঝিয়ে দেবার এবং কাহিনী গুলো গল্পের মত করে সহজ করে দেবার।
তো আসুন , আমরা গল্পে ঢুকে যাই।
আমরা কিছু বেসিক জিনিষ সবাই জানি । নিউটন ভাই বলে গিয়েছেন আপেল মাথায় পড়বেই , এটি মনে রাখতে হবে । মাধ্যাকর্ষণ খুব একটা জটিল বিষয় নয় , তাই এটা নিয়ে কথা না বলে মূল গল্পে যাই আসুন ।
আচ্ছা , টেনিস বল টা উপরে ছুড়ে মারলে সেটা নিচে পড়ে তাই না? এখন আমরা সবাই ই জানি (যারা জানেন না এখন জানবেন) , টেনিস বলটা যদি পকেটে করে কেউ পৃথিবীর বাইরে নিয়ে যায় , এরপর উপরে ছুড়ে মারে তখন ও তা হাতে পড়বে । এখানে একটা ব্যাপার অবশ্য আছে যে আশপাশে কোন গ্রহ থাকা যাবে না । কারণ তাহলে ঐ গ্রহের টানে টেনিস বল তো যাবেই, আপনিও চলে যাবেন ।
আর একটি ব্যাপার জানতে হবে , তা হল আমরা কোন কিছু কিভাবে দেখি । এটা একটু জটিল ,তাই মনযোগ দিবেন ।
ধরেন আপনি আয়নার দিকে তাকালেন রাত্রে বেলা , আপনি আপনার চেহারা দেখলেন , কেউ এসে রুমের লাইট নিভিয়ে দিল । এখনও আপনি আয়নার দিকে তাকানো কিন্তু এখন কি আর দেখা যাবে? যাবে না।
এটি ই মূল ব্যপার । তো কি দাঁড়ালো , আলো থাকলে আমরা দেখলাম , আলোর অনুপস্থিতি , দেখা শেষ । কারণ কোন বস্তু থেকে আলো রিফ্লেক্ট হয়ে আমাদের চোখে আসলেই আমরা দেখি । আমাদের জানা মোটামোটি শেষ । এখন নিচের গল্পটা পড়লেই আপনি স্বচ্ছ্ব ধারণা পেয়ে যাবেন ব্ল্যাক হোল কি ।
করিম কে একদিন ওর বাবা বললো যে যা , বাজারে গিয়ে আলু কিনে আন । ওদের গ্রামে রাত ৮টা বাজে তখন । অনেক রাত । রাস্তায় আলো ও নেই তেমন । করিম ও আগে কখনো ওদিক টায় ওভাবে যেতো না । তো করিম কাঁচা রাস্তায় উঠলো । এদিকে হয়েছে কি , বাজারে নতুন দোকান উঠানোর জন্য ইট সাজিয়ে রাখা হয়েছে রাস্তার মাঝ থেকে একটু দূরে । কি হল বুঝতেই পারছেন , রাস্তায় আলো ছিল না , করিম ইটের মধ্যে যেয়ে পড়লো । গেল মাথা ফেটে ।
এখন এক কাজ করুন । করিমের জায়গায় স্পেসশিপ আর ইটের জায়গায় ব্ল্যাক হোল বসান । মিললো কিছু? ছোটবেলার গল্প ছিল এই ধারণাটির উপরেই ।
এখন করিম তো রাস্তায় আলো ছিল না দেখে দেখে নি , কিন্তু স্পেসশিপ কেন দেখবে না এটা । স্পেসশিপের তো হেডলাইটের অভাব নেই । আর আমরা জানি স্পেসশিপ কে টেনে নিয়ে যেত । সেটাই বা কিভাবে । আসুন জানি ।
কেমব্রিজের একজন বিজ্ঞানী জন মিচেল এগুলোই ভাবতেন । ভাবতে ভাবতেই তিনি আবিষ্কার করে ফেলেন মূল ব্যপারটি ১৭৮৩তিনি শুধু একটা ধারনা দিয়েছিলেন । এর পরে অনেক ধারনা নিয়ে গবেষনা চলে। তবে লেটেসট ধারনা আসে ১৯১৫ সালে আইনস্টাইন এর সাধারন আপেক্ষিকতা আবিষ্কারের পর সালে।
আমরা পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে থাকি মহাকর্ষ বলের জন্য , যদি না থাকতো বল তবে আমরা উড়ে যেতাম । লাফ দিলে আর ফিরতাম না । আর যদি এ বল আরো বেশি হত?
হ্যা , আমরা মাটির নিচে ঢুকে যেতাম ।
এখন সব গ্রহের মহাকর্ষ তো আর পৃথিবীর মত নয় ।এখানেই ব্ল্যাক হোলের মজা টা ।
সোজা কথায় বললে যেসব গ্রহের মহাকর্ষ টান পাগলা টাইপ , তারাই ব্ল্যাকহোল । এখন আপনি ভাবছেন , টান দিল ভাল কথা কিন্তু আমি দেখবো না কেন ব্ল্যাক হোল ।
কারণ টা খুবই সহজ । এটির আকর্ষণ এমন ই পাগলা টাইপ যে , গ্রহ থেকে আলো কেও বের হতে দেয় না ব্ল্যাকহোল । টেনে ধরে রাখে মাটির কাছে । আর কোন বস্তু থেকে আলো না গেলে তো দেখা যাবে না সেটা । এজন্য দেখাও যায় না ।
নভোচারী না দেখে সোজা ব্ল্যাক হোলের দিকে অথবা ওটার আশপাশের দিকে এগুতে থাকে । যখন ই ওটার টানের মধ্যে পড়ে , টান খেয়ে গ্রহের মাটিতে আছড়ে পড়ে সেটা । এবং শেষ পর্যন্ত ও সে দেখতে পায় না গ্রহ টাকব্ল্যাক হোল দেখার কোনো উপায় নেই। কিন্তু বিজ্ঞানীরা মোটামুটি কতগুলো পদ্ধতি বের করে ফেলেছেন, যা দিয়ে বোঝা যায় আশপাশে ব্ল্যাক হোল আছে কি না। যদি দেখা যায় আশপাশের গ্যাসের মেঘ বা গ্রহ কোনো অন্ধকার অঞ্চলের দিকে সর্পিলাকারে ধাবিত হচ্ছে তাহলে বুঝে নিতে হবে সেখানে একটা ব্ল্যাক হোল আছে। অনেকটা নদীর মোহনায় ঘূর্ণির মতো। আমাদের নিকটতম কৃষ্ণগহ্বরটি (ভি৪৬৪১ এসজিআর) ছিল ১৬০০ আলোকবর্ষ দূরত্বে ধনু নক্ষত্রমণ্ডলীতে। তবে কৃষ্ণগহ্বরের একটা ভালো দিক হলো তার চারদিকে একটা নির্দিষ্ট ব্যাসার্ধ থাকে, যার বাইরের কাউকে সে টানাটানি করে না। । ( Scientists use satellites and telescopes in space to see the high-energy light.)ে ।
এজন্যই এই জিনিসের নাম ব্ল্যাক হোল




কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন